টিনেজে চেহারায় এমনিতেই ন্যাচারাল গ্লো থাকে, তাই সিম্পল লুকেই যেন বেশি সুন্দর লাগে। তারপরও কোনো অকেশন না আউটিংয়ে; একটু মেকআপ না করলেই যেন নয়! টিনেজারদের মেকআপ এর প্রতি আগ্রহের শেষ থাকে না। কারণ; ছোটবেলা থেকেই মাকে মেকআপ করতে দেখে মেকআপ এর প্রতি মোটামুটি সবার মধ্যেই একটা কৌতূহল জেগে উঠে। আমাদের মধ্যে অনেকেই তো মায়ের ভ্যানিটি ব্যাগে যা-ই পেয়েছি, সেগুলো দিয়েই মেকআপ আর ড্রেসআপ খেলেছি। তাই না? আর সেই থেকেই মেকআপে আমাদের হাতেখড়ি । আমাদের টিনেজ বয়সে এসে কৌতূহল মেটানোর জন্য বা না জেনে বুঝেই আমরা উল্টোপাল্টা মেকআপ করে ফেলি।
তাই টিনেজারদের স্কিনে কী ধরনের মেকআপ করলে ভালো হবে আর বয়সের সাথে কোন লুকটা মানানসই হবে; সেই ব্যাপারে আজকে কিছু স্টেপস রেকমেন্ড করবো। আপনি যদি টিনেজার হয়ে থাকেন, তাহলে পারফেক্ট লুক পেতে ফলো করুন ৬ টি স্টেপস। সেই সাথে মেকআপের কিছু টিপস আর ট্রিকসও জানা হয়ে যাবে।
টিনেজারদের জন্য মেকআপ অ্যাসেনশিয়ালস
এখন আমি কিছু মেকআপ প্রোডাক্ট সাজেস্ট করবো; যা টিনেজারদের মেকআপ লুকের জন্য পারফেক্ট হবে। কিন্তু এই প্রোডাক্টগুলো ডেইলি ব্যবহার না করলেও হবে; তবে এই প্রোডাক্টগুলো মেকআপ ব্যাগে থাকলে ভালোই হয়। তাহলে পারফেক্ট লুক পেতে আপনার ব্যাগে যেসকল প্রোডাক্টগুলো রাখবেন সেগুলো হলো-
- বিবি ক্রিম- ব্লেমিশ বাম(Blemish Balm), যেটা “বিবি ক্রিম” নামে বিখ্যাত, এমন একটি ক্রিম যা স্কিনকে ময়েশ্চারাইজড রাখবে, ইউ ভি রে এবং অন্যান্য ক্ষতিকর রশ্মি থেকেও প্রোটেক্ট করবে।
- কন্সিলার- চোখের নিচের কালচে ভাব দূর করতে চাইলে কন্সিলার প্রয়োজন। এছাড়া ব্রণের দাগ হাইড করতেও কন্সিলার দারুন কাজ করে।
- ক্রিম ব্লাশ – কিউট লুক চাইলে অবশ্যই রোজি পিংক টোনের একটি ক্রিম ব্লাশ কিনে নিতে পারেন, যা সব স্কিনের সাথেই মানাবে এবং লুকটাকে আরও ব্রাইট করে তুলবে।
- নিউট্রাল আই শ্যাডো প্যালেট – নিউট্রাল শেডের একটি প্যালেট ব্যাগে অবশ্যই রাখবেন। এইধরনের প্যালেট দিয়ে সবসময় ছিমছাম লুক ক্রিয়েট করতে পারবেন।
- আইলাইনার – আপনার চোখগুলোকে পপ করতে চাইলে মেকআপ ব্যাগে অবশ্যই একটি আইলাইনার রাখতে হবে, যা আপনার চোখের সৌন্দর্যকে এনহ্যান্স করে তুলবে।
- মাশকারা – মাশকারা এমন একটি প্রোডাক্ট যা রেগুলার ইউজের জন্য বা পার্টিলুকের জন্য আমার সবচেয়ে প্রিয়। মাশকারা ব্যবহারে আপনার পুরো লুকে ড্রামাটিক চেঞ্জ আনতে পারবেন।
- নিউট্রাল লিপস্টিক / লিপ গ্লস – বয়সের সাথে মানানসই এমন কিছু কালারের লিপ গ্লস অথবা লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। মেকআপের ইম্পরট্যান্ট একটি স্টেপ হচ্ছে লিপ গ্লস অথবা লিপস্টিক অ্যাপ্লাই করা। টিনেজে বেবি পিংক, ন্যুড ব্রাউন, পিংকিশ ন্যুড, ব্রিক রেড, পীচ ইত্যাদি কালারগুলো বেশ ভালো মানিয়ে যায়।
টিনেজারদের মেকআপ এর ৬ টি অ্যাপ্লিকেশন স্টেপস
সময় নষ্ট না করে চলুন জেনে নেয়া যাক টিনেজারদের মেকআপের ৬ টি গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ্লিকেশন স্টেপস-
১) স্কিন প্রিপারেশন
শুরুতেই, আপনার ত্বকের উপযোগী একটি টোনার দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এরপর একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে ফেলুন।
২) কন্সিলার অ্যাপ্লিকেশন
ডার্ক স্পট ও চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর করার জন্য একটি কন্সিলার অ্যাপ্লাই করে নিন। তবে খেয়াল রাখুন; কন্সিলারের পরিমাণ যেন বেশি না হয়ে যায় এবং ডার্ক স্পট গুলোতেই শুধুমাত্র ফোকাস করুন।
৩) বিবি ক্রিম অ্যাপ্লিকেশন
আপনার পছন্দমত একটি বিবি ক্রিম নির্বাচন করুন। একটি ব্রাশ অথবা হাত দিয়ে অ্যাপ্লাই করে ফেলুন। খেয়াল রাখতে হবে; ক্রিম যাতে ভালোভাবে ব্লেন্ড হয়।
BUY NOW AT SKINCARE SHOP
৪) একটু ব্লাশ অ্যাপ্লাই করুন
হালকা কালারের ক্রিম ব্লাশ লাগিয়ে নিন। ক্রিম ব্লাশ ব্যবহার করার সহজ তাই আপনারা চাইলেই হাত দিয়ে এটা অ্যাপ্লাই করে নিতে পারেন।
৫) আই মেকআপে ন্যাচারাল শেইড সিলেক্ট করুন
একটি আইশ্যাডো প্যালেট থেকে ১-২টি নিউট্রাল কালার চুজ করে চোখের উপরে অ্যাপ্লাই করে নিন। এই বয়সে ন্যাচারাল শেইডগুলো বেশ ভালো মানাবে। এরপর আইলাইনার দিয়ে; একটি বর্ডার ক্রিয়েট করে দিতে পারেন। শেষমেশ একটি মাশকারা দিয়ে চোখের লুক কমপ্লিট করুন।
৬) লিপস্টিক / লিপ গ্লস অ্যাপ্লাই করুন
সবশেষে মেকআপ লুকের ফিনিশিং দিতে ড্রেসের সাথে মানানসই লিপস্টিক অথবা লিপগ্লস লাগিয়ে ফেলুন। লিপস্টিক সিলেকশনের সময় স্কিনটোনকে কমপ্লিমেন্ট করে, এমন শেইড পিক করুন।
টিনেজারদের জন্য কিছু মেকআপ টিপস অ্যান্ড ট্রিকস
- মেকআপের আগে সবসময় ময়েশ্চারাইজার আর প্রাইমার ব্যবহার করুন। এটা আপনার বেইজ মেকআপের জন্য আপনার স্কিনকে প্রোপারলি প্রিপেয়ার করবে, সেবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোল করবে আর মেকআপকে লং লাস্টিং করবে।
- মাশকারা অ্যাপ্লাইের আগে ল্যাশ কার্লার দিয়ে ল্যাশগুলো কার্ল করে নেয়া ভালো। এটা আপনার আই লুককে আরও এনহ্যান্স করে তুলবে।
- সবসময় ভালো ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন; যাতে আপনার স্কিনের কোন ক্ষতি না হয়। ভালো ব্রান্ডের প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে; অ্যাকনে ব্রেক আউটস কম হয় এবং স্কিনে ইরিটেশনও হবে না।
- কন্সিলার কেনার সময় স্কিনটোনের সাথে ম্যাচ করে কিনবেন এবং কন্সিলার দেওয়ার পরে একটি লুজ পাউডার দিয়ে সেটা সেট করে নিবেন।
- দিন শেষে মেকআপ উঠিয়ে ফেলা অনেক ইম্পরট্যান্ট। এর জন্য ক্লেনজিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং এই স্টেপসগুলো ফলো করতে ভুলবেন না।
- পাশাপাশি অবশ্যই হেলদি ডায়েট চার্ট মেইনটেইন করতে হবে।
- প্রচুর পরিমানে পানি খেতে হবে। তাহলে; স্কিন ভেতর থেকে গ্লো করবে এবং স্কিন সুন্দর হলে মেকআপ আরও ফ্ললেস দেখাবে।