গ্লাসেস বা চশমা, আমাদের অনেকের জন্যই এটি প্রয়োজনীয় জিনিস তো বটেই, এখন কিন্তু এটাকে ফ্যাশন অ্যাকসেসরিও বলা যায়। চশমার ফ্রেমের রঙে, শেইপে আর ধরনেও ফ্যাশনের ছোঁয়া লেগেছে। রেগুলার আমরা যারা চশমা পরে বের হই, অনেকেই বুঝতে পারি না যে চশমার সাথে কীভাবে মেকআপ করলে লুকটা পারফেক্ট হবে। চশমা পরা মানেই সব সৌন্দর্য শেষ, এটা একদমই ভাববেন না! আজকের আর্টিকেলটি চশমা ইউজারদের জন্য, মেকআপ করতে কোন ৪টি বিষয়ে খেয়াল রাখবেন সেটা এখনই জেনে নিন।
চশমার সাথেও পারফেক্ট লুক
চশমাটা প্রয়োজনের, কিন্তু অনেকে শখ করেও পাওয়ার ছাড়া ফ্যাশনেবল গ্লাস ইউজ করতে পছন্দ করেন। লেন্স পরতে অনেকেই আনকমফোর্টেবল ফিল করেন। আবার রেগুলার তো লেন্স পরা ঠিকও না। তাই চশমাটাই ভরসা! চশমা পরলে সৌন্দর্য্যে ভাটা পরে না, বরং চশমার সাথে ঠিকঠাকমতো মেকআপ লুক ক্যারি করলে আপনাকে লাগবে আরও আকর্ষণীয়। তবে ফেইসের শেইপের সাথে মানানসই ফ্রেম সিলেক্ট করা খুবই জরুরী। আজকের আর্টিকেলে আপনাদের জানাবো মেকআপ করার সময় কোন বিষয়গুলোতে একটু নজর দিলে চশমাতেও আপনাকে লাগবে আকর্ষণীয়। আশা করছি এই টিপসগুলো আপনাদের জন্য হেল্পফুল হবে। চলুন ঝটপট দেখে নেই সেগুলো।
১) কন্সিলার বা কালার কারেক্টরের ব্যবহার করুন
চোখের নিচের কালচে ভাব ঢাকতে সরাসরি বিবি ক্রিম, পাউডার বা ফাউন্ডেশন লাগাচ্ছেন কি? এতে কিন্তু কালো দাগ আরও ভিসিবল হয়, স্কিন আনইভেন লাগে। চশমার সাথে এটা আরও ভালো বোঝা যায়। কন্সিলার বা কালার কারেক্টরের ব্যবহার কালচে ভাব কিংবা দাগ হাইড করতে দারুন কার্যকরী। কন্সিলার বা কালার কারেক্টর অ্যাপ্লাই করে তারপর স্কিনটোনের সাথে ম্যাচ করে কমপ্যাক্ট পাউডার বা ফাউন্ডেশন লাগাতে হবে। আর রেগুলার ইউজের জন্য বিবি ক্রিম, সিসি ক্রিম, বিবি পাউডার বেশ ভালো অপশন। কেননা এগুলো লাইট কভারেজ দেয় আর চশমা ইউজের ফলে নাকের পাশ থেকে মেকআপ উঠে যাওয়ার ভয় থাকে না।
২) ভ্রু জোড়াতে ফোকাস দিন
চোখের সৌন্দর্যের অনেকটাই নির্ভর করে আইব্রোর উপর, আর ঠিকঠাক শেইপের ভ্রু চশমার সাথে বেশ আকর্ষণীয় দেখায়। আইব্রোর আকৃতি যদি মুখের সঙ্গে মানানসই না হয়, তাহলে পুরো লুকটাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। স্বাভাবিক লুকের জন্য আইব্রো পেন্সিল অথবা আইব্রো পাউডারের শেইড সব সময় চুলের রঙের চেয়ে এক অথবা দুই শেইড হালকা নিন। যদি আইব্রো পমেড, পাউডার বা আইব্রো জেল দিয়ে ভ্রু আঁকতে চান, তাহলে আইব্রো ব্রাশ ও স্পুলি ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। ভুল আইব্রো পেন্সিলের শেইড পিক করা, ওভার প্লাক করা, কালো করে ভ্রু আঁকা এগুলো আপনার লুককে আর্টিফিসিয়াল করে তোলে। তাই এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন।
৩) চোখের সাজে ন্যাচারাল শেইড পিক করুন
চশমার সাথে গ্লিটার আইলাইনার, ডার্ক শেইডের আই শ্যাডো, শিমারি আই লুক এগুলো বেমানান লাগে। তাই, চশমার সাথে আই মেকআপে খেয়াল রাখুন কিছু বিষয়। আই শ্যাডো দিতে চাইলে একদম ন্যাচারাল ন্যুড শেইড পিক করতে পারেন। তবে সবচেয়ে ভালো লাগবে জাস্ট ওয়াটার লাইনে ন্যুড কাজল আর চোখের উপরের পাতায় আই লাইনার। এতে চোখ বড় দেখায় এবং চশমার সাথেও বেশ ভালো লাগে। সরু ফ্রেমের বা রিমলেস গ্লাস পরলে চিকন করে লাইন টানলে ভালো দেখাবে, আর মোটা ফ্রেমের গ্লাস পরলে একটু বোল্ড বা মোটা করে কাজল দিতে পারেন। মাসকারা শুধু উপরের ল্যাশে অ্যাপ্লাই করুন আর চশমার সাথে ফলস আই ল্যাশ এড়িয়ে চলুন।
৪) লিপস্টিকের রঙে আনুন বৈচিত্র্য
যেহেতু আই লুক একদমই ন্যাচারাল থাকছে, সেক্ষেত্রে লিপস্টিকে রঙটা হতে হবে নজরকাড়া। চশমার ফ্রেমের রঙটাও বিবেচনায় রাখবেন। যেমন মেরুন বা রেড ফ্রেমের চশমা পরলে সেই ধরনের শেইডের লিপ কালার সিলেক্ট করতে পারেন। তবে আপনি কী রঙের ড্রেস পরবেন, কোথায় যাচ্ছেন- এগুলো খেয়াল রেখে লিপস্টিকের কালার বেছে নিন। স্কিনটোন ও লিপস্টিক মিলিয়ে নেয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শ্যামলা ত্বকে যেই শেডটা ন্যাচারাল ন্যুড দেখায়, ফর্সা ত্বকে তা ব্রাউন কালার বলে মনে হয়। মেরুন রেড, মভ, কফি ব্রাউন, রোজি বা ডাস্টি পিঙ্ক আর ফুশিয়া কালারটা শ্যামলাদের জন্য গুড অপশন। লাইট পিঙ্ক, ন্যুড ব্রাউন, পীচ, অরেঞ্জ রেড এগুলো ফেয়ার স্কিনের সাথে খুব ভালো যায়।
তাহলে জেনে নিলেন, চশমার সাথে কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখলে আপনার মেকআপ লুক পারফেক্ট হবে! সেই সাথে লাইট বেইজ মেকআপ, একটু ব্লাশন আর মানানসই ফ্রেম, ব্যস! চশমাতেও আপনাকে লাগবে আকর্ষণীয় ও আত্মবিশ্বাসী। যেকোনো লুকই কনফিডেন্টলি ক্যারি করতে পারলে সেটা আপনার ব্যক্তিত্বকে আরও ফুটিয়ে তোলে।